মুক্তিযোদ্ধাদের দুর্বিষহ জীবন
"খ্যাতিই বল, কীর্তি বল, মৃত্যু-পরে কিছু নেই,
যদিই আমি না থাকিতো, 'মাজার' তোলার অর্থ কি ?
আলোর দেখা ততক্ষণই, লন্ঠনে তেল যতক্ষণ,
নিভবে বাতি, রইবে আলো - এই প্রলাপের অর্থ কি ?"
যদিই আমি না থাকিতো, 'মাজার' তোলার অর্থ কি ?
আলোর দেখা ততক্ষণই, লন্ঠনে তেল যতক্ষণ,
নিভবে বাতি, রইবে আলো - এই প্রলাপের অর্থ কি ?"
আমরা একটু মনোযোগ দিয়ে ছন্দ টা বুঝার চেষ্টা করি। জীবনদশায় কারও প্রাপ্য তাকে না দিয়ে, মৃত্যুর পর তাকে সোনার আসনে বসানোর কোন মানে হয় না।
গত ১৬ ডিসেম্বর , নান্দাইলে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। তখন সেখানে একটি লোককে দেখি। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু ...... এত অসহায় তার অবস্থা।দাড়িয়ে ছিলেন তিনি, দেখে পরে তাঁকে বসতে দিলাম। তার এখন দুই বেলা খাওয়া জোটে না...(শাকিল নামে এক বন্ধুর বক্তব্য)
হায় রে, তারা নাকি আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। হু, ঠিকই আছে আমাদের দরকার ছিল স্বাধীনতা ... আমরা তা পেয়েছি, আর কি লাগে।। স্বাধীন হয়ে আমরা প্রশান্তির নিশ্বাস নিচ্ছি । শুধু তারাই আছে দুর্ভোগে , আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা। বাংলাদেশের ৮০% মুক্তিযোদ্ধারা আজ অসহায় দিন যাপন করছে।
অনেকে বলে মুক্তিযোদ্ধারা যে সুবিধা পায় তা অনেক। কিন্তু আসলে কয়জনের জন্য এই সুবিধা গুলো? যারা একটু শিক্ষিত , যারা সমাজে কিছুটা মাথা উঁচু করে দাড়াতে পেরেছে তাঁদের ছেলেমেয়েরা পাচ্ছে সুবিধা গুলো । কিন্তু এমন খুবই কম । অধিকাংশই দুর্ভোগের জীবনযাপন করছে।
মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধাদের
নিয়ে অনেক গান, কবিতা, গল্প লেখা হয়েছে। অনেকগুলো হিট সিনেমাও হয়েছে। গান হিট হয়েছে তো
গায়ক, গীতিকারের নাম হয়েছে। কবিতা, গল্প হিট হয়েছে তো লেখকের নাম
হয়েছে। সিনেমা হিট হয়েছে তো প্রজোযক, পরিচালক লাভবান হয়েছেন। একজন
মুক্তিযোদ্ধার কি লাভ হয়েছে ?
এখানে মুক্তিযোদ্ধা একটা সাবজেক্ট মাত্র। না, এগুলোকে আমি
নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছিনা। অবশ্যই সমাজে এগুলোরও ইমপ্যাক্ট আছে।
মৃত্যুর পর একজন মুক্তিযোদ্ধাকে হয়ত 'গার্ড অফ অনার' দেওয়া হবে।মৃত ব্যক্তিটির এই 'গার্ড অফ অনার' এ কি প্রয়োজন ? জীবদ্দশায়ই যখন
তাঁকে প্রাপ্য সম্মানটুকু দেওয়া গেলনা।
No comments:
Post a Comment